জামালপুর ময়মনসিংহ জেলার মধ্যে প্রথম মহুকুমা হিসেবে ১৮৪৫ সালে মর্যাদা লাভ করে। মহুকুমা সৃষ্টি হওয়ার ১৩৩ বছর পরে ১৯৭৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর জেলার মর্যাদা পায়। জামালপুর জেলা গঠনের আন্দোলন মূলত: বঙ্গভঙ্গের পরে ১৯১২ সালেই সূচীত হয়। ১৯১২ সালে লর্ড কার্জন জামালপুরকে জেলা করার ঘোষণা দেন। ১৯১৯ সালের দিকে ধনবাড়ীর নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ধনবাড়ীকে জেলা সদর করে জামালপুর ও টাঙ্গাইলকে নিয়ে একটি জেলা করার প্রস্তাব করেন। কিন্তু এতে জামালপুর ও টাঙ্গাইলবাসী কোন পক্ষই সমর্থন করেনি। ১৯০৮ সালে শেরে-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক জামালপুর এর মহুকুমা প্রশাসক থাকার সময় জামালপুরকে জেলা করার দাবী আরো বেগবান হয়ে উঠে। জামালপুরকে জেলা হেডকোয়ার্টার করার জন্য ১৯১৭ সালে জামালপুর পৌর এলাকায় ২৩৫ একর জমি সরকার অধিগ্রহণ করে। ১৯২০ সালে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর থানার কয়েকটি গ্রাম সরিষাবাড়ী থানার সাথে সংযুক্ত করা হয়। ১৯৩৮ সালে তৎকালীন বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিদের উদ্যোগে জামালপুরকে জেলা করার দাবী সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। জামালপুর না টাঙ্গাইল কোথায় জেলা সদর হবে এ নিয়ে তৎকালীন বৃটিশ সরকারও কোন সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেনি। এ সময়ে বন্যা, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ইতাদি কারণে জামালপুর জেলার বাস্তবায়ন পিছিয়ে পড়ে। ঐ সময়ে কংগ্রেস ও মুসলিমলীগের বহু প্রভাবশালী নেতা থাকলেও নিজেদের কোন্দলের কারণে তারা জামালপুর জেলার বাস্তবায়ন দেখে যেতে পারেননি, যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট তুলে ধরতে পারেননি জামালপুর জেলা গঠনের প্রয়োজনীয়তা। যে কারণে জামালপুর জেলা প্রতিষ্ঠিত হতে প্রায় ১৩৩ বছর সময় লেগেছে।
১৯৭১ সালে ১০ ডিসেম্বর জামালপুর হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরেই জামালপুরকে জেলা করার দাবী আবারো বেগবান হয়ে উঠে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ১৯৭৫ সালে জামালপুরকে জেলা করার প্রতিশ্রুতি দেন। ১৯৭৮ সালে ২৬ ডিসেম্বর জামালপুর বাসীর জন্য একটি আনন্দের দিন। কারণ এ দিনে জামালপুরকে স্বাধীন বাংলাদেশের ২০তম জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
জামালপুর জেলা সৃষ্টির প্রতিষ্ঠা লগ্নে যে সকল সরকারী কর্মকর্তা বিশেষ অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদ সচিব জনাব কেরামত আলী, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার জনাব খানে আলম খান, ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক জনাব বদিউর রহমান, জামালপুর মহুকুমা প্রশাসক জনাব আব্দুর রশিদ প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস